আলো
তুমি বলেছিলে, ‘বর্ষায় বর্ষাতি জুতো পরা ভালো।’ বলেছিলে, ‘সাথে রেখো ছাতা।’ মেনেছি তোমার কথা আমি ঠিকঠাক; তবু দ্যাখো, বৃষ্টি-জলে ভিজে গেছে মাথা! তবুও তোমার কথা মেনে চলা ভালো; বৃষ্টির পরে রোদ– রৌদ্র মানেই সে তো আলো!
তুমি বলেছিলে, ‘বর্ষায় বর্ষাতি জুতো পরা ভালো।’ বলেছিলে, ‘সাথে রেখো ছাতা।’ মেনেছি তোমার কথা আমি ঠিকঠাক; তবু দ্যাখো, বৃষ্টি-জলে ভিজে গেছে মাথা! তবুও তোমার কথা মেনে চলা ভালো; বৃষ্টির পরে রোদ– রৌদ্র মানেই সে তো আলো!
সময় হারিয়ে গেছে, তবু সেই সে বকুলগাছ আজও জেগে আছে। জেগে আছে দিগন্তপ্রসারী মাঠ, পিয়ালের বন– যেখানে হারিয়েছিল মন। ফিরে গেলে ঠাঁই দেবে সেই তরুমূল, আঁচল উজাড় করে দেবে তার ফুল। চুলের সুবাসে ফের মাতোয়ারা মন– চারিদিকে পথঘাট বড়ো নির্জন!
এক কুড়ি দশ মানে কত– প্রশ্নটা তার বুকের কাছে ছড়িয়ে যায় খইয়ের মতো শিউলি এবং টগর গাছে। শিউলি হাসে টগর হাসে– দিগ-বালিকার বুকের কাছে এক কুড়ি দশ মানে কত প্রশ্ন হয়ে ঝুলেই আছে। আমরা যারা রোজ প্রভাতে– শিউলি কুড়াই টগর কুড়াই দিগ-বালিকা ওই যে আসে চলো দেখে চক্ষু জুড়াই।
যারা গর্তে ঢোকার তারা গর্তে ঢুকে যাক যারা বেরিয়ে আসার তারা ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসুক। যারা মূক ও বধির তারা মুখ বন্ধ করে রাখুক যারা মুখর হতে চায় তারা আজ চিৎকার করুক। যারা জন্মভীতু তারা দরজায় খিল তুলে দিক যারা প্রত্যয়ী তারা রাস্তায় বেরিয়ে পড়ুক। সামনে রাঙা পলাশের বন সামনে উথালপাথাল ঝড় যাদের সাহস আছে
এক চিলতে নদীর উদরে কাস্তে চাঁদ টেনে যায় বাঁকাচোরা দাগ আঁধারের বুক চিরে উড়ে যায় বাদুড়ের পাল বিড়ালের কাঁদুনিতে ভয়ের আভাস! চাঁদ ডুবে যেতে চায় জলে ঝিকিমিকি বাঁকাচোরা দাগগুলি ছবি হয়ে যায়; ছবিতে তোমার মুখ– তুমি আমি বসে মুখোমুখি!
ছেড়ে দাও– চলে যাক যেদিকে যা যেতে চায় মিছে মোহ, মিছে বেঁধে রাখা তার চেয়ে ভালো এই চোখ মেলে থাকা আকাশে তারারা হেসে কী কথা জানায় প্রতিপদী ক্ষীণ-কটি চাঁদ পলে পলে জ্যোৎস্না হতে চায় ভোরের দোয়েল পাখি শোনায় যে গান লাউগাছ জাগে সেই গানের আশ্বাসে ঠাকুমার পাকা চুল ঠাকুরদার তামাকের ঘ্রাণ সবকিছু বেঁচে থাকে ধরণীর
(উত্তরবঙ্গের বিশিষ্ট কবি ব্রততী ঘোষ রায় স্মরণে) সবাই যদি তোমার মতো হত মুক্তমনা উদার প্রকৃতির শান্ত কোমল স্বভাবে সংযত ধৈর্যপ্রবণ প্রাজ্ঞ এবং ধীর। সবার যদি থাকত তোমার মতো উজাড় করা গভীর ভালোবাসা সবাই যদি ঠিক তোমারই মতো সবার বুকে জাগিয়ে দিত আশা! তোমার গৃহে গুণীজনের ভিড়ে ‘প্রতিপক্ষ’১ পনেরো দিন বাদে ছাত্ররা সব বিজিআর-কে ঘিরে মেতে
এই দুর্গারা কাজ করে মাঠেঘাটে এই দুর্গারা নগ্ন পায়েই হাঁটে এই দুর্গারা মাথায় কাঠের বোঝা এই দুর্গারা ক্লান্তিতে চোখ-বোজা এই দুর্গারা দুর্বল অসহায় এই দুর্গারা মূক ও বধির প্রায় এই দুর্গারা ধর্ষিতা প্রতিদিন এই দুর্গারা সমাজের চোখে হীন! এই দুর্গারা গর্জায় যদি আজ দুষ্টু লোকের মাথায় পড়বে বাজ! এই দুর্গারা তোলে যদি হাতিয়ার মহিষাসুরেরা রক্ষা