অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত

কেঁদে যায় পদ্মার দু-ধার

(কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত-কে স্মরণ করে)

বৃষ্টি পড়ার মতো তারারাও টুপটাপ ঝরে যান।
ক্রমে ক্রমে পৃথিবী দরিদ্র হতে থাকে।
আমাদের পাঁজর বেয়ে বোবা কান্না নামে;
থেমে যায় যত্নে শেখা যাবতীয় বাক্যের নির্মাণ।
বয়স হলেই যদি চলে যান বরিষ্ঠ কবিরা--
হাত ধরে তবে কারা শেখাবেন কবিতার ভাষা!
অলোকরঞ্জন কবি, জার্মানিতে নিপাট বাঙালি-- 
আমাদের দিয়েছেন জার্মান কবিতা থেকে কত উপহার!
সেই স্রোত স্তব্ধ হল তাঁর মহাপ্রস্থানের সাথে;
পদ্মার এপার কাঁদে, কেঁদে যায় পদ্মার ওপার।

বিশিষ্ট কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত একদিকে যেমন অনেক বাংলা কবিতা জার্মান ভাষায় অনুবাদ করেছেন, তেমনি জার্মান ভাষার বহু লেখা বাংলায় অনুবাদ করেছেন। বাংলা-জার্মান সাহিত্যের মেলবন্ধনে তাঁর অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে জার্মান সরকার ১৯৮৫ সালে তাঁকে ‘গ্যেটে’ পুরস্কারে সম্মানিত করে। তাঁর কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে আছে ‘যৌবনবাউল’, ‘প্রেমে পরবাসে’, ‘গিলোটিনে আলপনা’, ‘মরমী করাত’ প্রভৃতি। ১৯৯২ সালে ‘মরমী করাত’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তাঁকে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়াও পেয়েছেন আনন্দ পুরস্কার, প্রবাসী ভারতীয় সম্মান, রবীন্দ্র পুরস্কার। মঙ্গলবার জার্মানিতে স্থানীয় সময় রাত নটা নাগাদ নিজ বাসভবনে মৃত্যু হয় কবির। বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। বেশ কয়েক বছর ধরেই বার্ধক্যজনিত নানান সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। 

2 thoughts on “কেঁদে যায় পদ্মার দু-ধার”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *